মহাসড়কে বাইক রাইডিং : করোনা ঝুঁকিতে হাজারও মানুষ

টি. আর. দিদার, চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :
মরণব্যাধি করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে সারা দেশের গণপরিবহন বন্ধ করেছে সরকার। চিরচেনা ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেই কোন যানবাহনের ব্যস্ততা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মহাসড়কে নেই যাত্রীদের ভীড়।

কিন্তু জরুরী প্রয়োজন বা সামান্য প্রয়োজনে যারাই ঘর থেকে বের হচ্ছে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তাদের ভরসা এখন মটোরসাইকেল রাইডিং।

‘উবার’ বা ‘পাঠাও’ নয়। শুধুমাত্র ব্যক্তি উদ্যোগে যাত্রী পারাপারে মটোরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে গেছে শতশত মটোরসাইকেল চালক। ওই চালকের অধিকাংশদের নেই হেলমেট, মাস্ক ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার পোশাক। যাত্রীরাও দশগুণ ভাড়া গুণে চালকের পিছনে উঠে যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।

gif maker

একটি মটোর সাইকেলে দুইজন যাত্রী নিলে চালক সহ তিনজন গাদাগাদি করে ছুটে চলছে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। করোনার এমন করাল গ্রাসের মধ্যে মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ওই মটোরসাইকেল চালক ও যাত্রীরা।

মটোরবাইক চালক আল আমীন জানান, “আমি ট্রাক্টর চালাই। এখন কোন কাজ নাই। রোডে অনেক যাত্রী কিন্তু গাড়ি নাই। তাই মটোরসাইকেল নিয়া বাহির হইছি। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চালাই। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পাই।”

হেলমেট নেই লুঙ্গি পরে বাইক চালাচ্ছেন কেন? এমন প্রশ্নে তিনি জানান- “কোন সমস্যা নাই। করোনার কারণে গাড়ি বন্ধ পুলিশও কিছু কয় না। আমি ভাল চালাইতে পারি, এটাই বড় কথা।”

যাত্রী রবিউল জানান- “চান্দিনা বাস স্টেশন থেকে মাধাইয়া বাজারের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। বাস ভাড়া ৫টাকা। কিন্তু মহাসড়কে গণপরিবহন না থাকায় মটোরসাইকেল যোগে যাচ্ছি। ভাড়া নিচ্ছে ৫০ টাকা।”

/

 

করোনা সতর্কতায় কোন ব্যক্তি থেকে সামাজিক দূরত্ব ৩ ফুট রাখার কথা থাকলেও এক মটোরবাইকে ২ ফুটের মধ্যে গাদাগাদি করে ৩জন বসেন কেন? এমন প্রশ্নে তিনি জানান- “কি করবো, তাড়াতাড়ি যেতে হবে তাই বাধ্য হয়েই উঠেছি।”

এ ব্যপারে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহসানুল হক জানান- “অপরিচিত ব্যক্তিদের সাথে বাইকে উঠা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। বাইকে যাত্রীবহন করলে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।”

কারণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন- “এমনও হতে পারে করোনা আক্রান্ত কোন যাত্রী আগে ওই চালকের সাথে বসেছে। ওই যাত্রী চালক ও বাইকের সিটে ছড়িয়ে গেছে ওই ভাইরাস। সেখান থেকে অন্যযাত্রী বহন করে নিয়ে যাচ্ছে ওই ভাইরাস।”

এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ ময়নামতি ক্রসিং ফাঁড়ির ইন-চার্জ (ওসি) সাফায়াত হোসেন জানান, “গণপরিবহন বন্ধের পাশাপাশি মহাসড়কে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার যোগে যাতে গণহারে যাত্রীবহন করতে না পারে সেজন্য আমাদের হাইওয়ে পুলিশ যথেষ্ট তৎপর রয়েছে। কিন্তু মটোরসাইকেলে যাত্রী বহনের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এখন থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবো।”

এমআরআর/প্রিয় সময়