ফরিদগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) সংবাদদাতা:
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে চলছে হরিলুট, চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছেই। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

সংরক্ষিত আসনের সদস্য ঝর্ণা বেগম, জানাহারা বেগম ও শিরিনা আক্তারের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন মহিলা মেম্বার ঝর্ণা বেগম ও জাহারা বেগমের নামে দুটি কাবিখা প্রকল্প উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবয়ন অফিসে জমা দেন। ওই প্রকল্প দুইটির মধ্যে একটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অপর একটি দায়সারা ভাবে সম্পন্ন করেই মহিলা সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মহিলা মেম্বার শিরিনা বেগম ও ঝর্ণা বেগমের নামে বিগত দিনগুলোতে টি. আর, কাবিখা, এলজি এসপি, ও ৪০ দিনের কর্মসূচিসহ কয়েকটি প্রকল্পের বিলও ডিওতে স্বাক্ষর করিয়ে বিলসমূহ উত্তোলন করে চেয়ারম্যান নিজেই আত্মসাৎ করেন। মহিলা সদস্য জাহানারা বেগম জানান, আমাকে অদ্যাবদি কোন প্রকল্প দেওয়া হয়নি। সরকারের মহিলা কোটায় প্রকল্প থাকলেও চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন নিজেই মহিলা মেম্বারদের স্বাক্ষর জাল করে নিয়ে যান।

এদিকে পরিষদের মেয়াদকাল দু’বছর অতিক্রম করলেও প্যানেল চেয়ারম্যান নামে রেজুলেশন না করা, পরিষদের মাসিক সভায় সদস্যদের স্বাক্ষর জাল, ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ, মেম্বারদের সম্মানি ভাতা নিয়মিত প্রদান না করা, ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ড থেকে হোল্ডিং নাম্বার বাবদ ২ শ থেকে ৫ শত টাকা আদায় করাসহ জন্ম সনদ, বয়স্ক, বিধবা, মাতৃকালিন ভাতার কার্ড ও ওয়ারিস সনদসহ বিভিন্ন ভাতার কার্ড প্রদানে অনিয়মের এমন সব অভিযোগ করে চলতি মাসের ৭ তারিখে উক্ত ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের ৩ জন সদস্য-ই চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপনের বক্তব্য হচ্ছে, আমি সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের সব চাইতে বেশি প্রকল্প দিয়েছি, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা।

একই কায়দায় উপজেলার অপরাপর ইউনিয়ন পরিষদগুলোও অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়েই চলছে। সম্প্রতি ১৫নং রুপসা ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম সনদে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে ৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের কর্মসৃজন কাজে ব্যাপক অনিয়ম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।


উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিল্টন দস্তিদার জানান, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মহিলা মেম্বাররা যে অভিযোগ এনেছে, ওই প্রকল্পের প্রথমে বিল উত্তোলন করে তাদেরকে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে, পরবর্তিতে বাকি বিল উত্তোলন করে হয়তো মহিলা মেম্বারদেকে টাকা দেওয়া হয়নি। প্রকল্পের সভাপতি ছাড়া অন্য কাউকে বিল প্রদানের কোনো নিয়ম আছে কি প্রশ্নের জবাবে তিনি বক্তব্য দিতে রাজী হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিউলী হরি জানান, লিখিত বক্তব্য হাতে পাইনি, পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।