ঘূর্ণিঝড় রেমাল আমাদের শিক্ষা ও প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস

জিএম মুছা :
পরম করুনাময় রাব্বুল আলামিন তিনি তার বান্দাদের অত্যন্ত ভালোবাসেন, যে কারণে আল্লাহ তায়াআলা তার প্রিয় বান্দাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য অনেক সময় বান্দাদের উপর হঠাৎ বিপদ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ চাপিয়ে দেন সুতরাং আমাদের উপর যখন কোন বিপদ আসে, ওই সময় বিপদে ধৈর্য হারা না হয়ে, আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে ধৈর্য ধারণ করে বিপদের মোকাবেলা করাই আমাদের একমাত্র কাজ।

তাছাড়া আমাদের মনে রাখতে হবে, পৃথিবীতে যখন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে আসে, তখন আমাদের ভেবে নিতে হবে এর পিছনে নিশ্চয়ই তার কোন মহৎ উদ্দেশ লুকিয়ে আছে, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ যখন আমাদের উপর পতিত হয় তখন তা শুধু আমাদের ক্ষতির জন্য নহে, বরং তা আমাদের জন্য ভালো কিছু সংবাদ বহন করে নিয়ে আসে আমাদের আশীর্বাদ হিসেবে দেখা দেয়।

উদাহরণ স্বরূপঃ আমরা যুক্তি উপস্থাপন করতে পারি যেমন, বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, প্রতিবছর এদেশের উপর দিয়ে বয়ে যায় বন্যা জলোচ্ছ্বাস ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি, ফলে আমাদের জান মাল ফসল, ঘের,বাড়ি ঘর গাছপালা পশুপাখি রাস্তাঘাট, বেড়িবাঁধ, কালভার্ট ব্রিজের অনেক ক্ষতি সাধিত হয়, কিন্তু পরক্ষণে আমরা দেখি ওই সমস্ত এলাকায় পলি মাটি জমে ফসলের যথেষ্ট উৎকর্ষ সাধিত হয়, তখন আমাদের মুখে হাসি ফোটে, অনেক সময় এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেয়। তাই আমরা বলতে পারি প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুধু ক্ষতি করে না আমাদের জন্য ভালো কিছু বহন করে থাকে আমাদের আশীর্বাদ হয়ে আসে।

গত ইং ২৭ মে সন্ধ্যা থেকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রেমাল তার নিষ্ঠুর তাণ্ডবতায়, বিস্তীর্ণ অঞ্চলে উচ্চ জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের জেলাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে, পানির তোড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা, কাঁচা ঘরবাড়ি দেয়াল গাছ গাছালি রাস্তাঘাট ভেঙে তছনছ করে দিয়ে গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা, ভারি বর্ষনে রাজধানী ঢাকা বন্দরনগরী ,দেশের বিভিন্ন এলাকা বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পতিত হয়েছে, উপকূল ও তৎসংলগ্ন এলাকা আশেপাশে ১৯ জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা ,বাগেরহাট, মংলা-ঝালকাঠি ,বরিশাল ,পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, ফেনী ,বরগুনা, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম নোয়াখালী লক্ষীপুর, চাঁদপুর নড়াইল গোপালগঞ্জ ,শরীয়তপুর, ঝযশোর ঘূর্ণিঝড়ের সময় ঝড়ে গাছ ও দেয়াল চাপা পড়ে ও পানিতে ডুবে ,অন্তত ১১ জনের প্রানান হানির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে, শুধু তাই নয় উপকূলের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্ধি ও গৃহহীন হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে আমাদের এদেশ রক্ষাকারী কবচ সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নিরীহ প্রাণী হরিণ সহ অনেক প্রাণী মরে পানিতে ভাসতে দেখা গেছে, এসব কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় রোমেলের প্রভাবেই ঘটেছে।

‌ এখন প্রশ্ন হল এটা তো নিছক আমাদের উপর ঘটে যাওয়া মহাএক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যার কারণে আমাদের জানমাল পশু পাখি ঘরবাড়ি গাছপালা রাস্তা ঘাট ঘেরে মৎস্য সম্পদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন দেখার বিষয় ঘূর্ণিঝড় রেমেল আমাদের কি শিক্ষা দিয়ে গেল ? সে কি আমাদের ভালোর জন্য আমাদের মেহমান হয়ে এলো, নাকি শুধুমাত্র খালি হাতে এলো নাকি আমাদের জন্য ভাল কোন কিছুর সংবাদ নিয়ে এলো? সেটাই এখন আমাদের ভেবে দেখা উচিৎ।

ধরুন আমরা অনেকে গ্রাম ,গঞ্জে শহর, নগর ,বন্দরে বসবাস করে থাকি, আমাদের সকলের একটা বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে কমবেশি, আমাদের বাসায় আমাদের পরিচিত জন বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন প্রায় এসে থাকেন আমাদের মেহমান, মেহমান এলে আমরা খুব খুশি হই, তাদের আদর আপ্যায়নের কোন ত্রুটি আমরা রাখিনা, তাদের আদর আপ্যায়নের জন্য সকল রকম ব্যবস্থা করে থাকি শুধু তাই নয়, মেহমান কিন্তু খালি হাতে আসে না সঙ্গে আমাদের রসনা তৃপ্তির জন্য হাতে কিছু নিয়ে আসেন, এই মেহমানদের জন্য আমাদের কমবেশি পরিশ্রমও করতে হয় যেটা সবার ক্ষেত্রে সবসময় প্রযোজ্য, আবার মেহমান চলে গেলে ও আমাদের আরও একটা পরিশ্রম করতে হয় এটা আমাদের সবার জানা।

এক্ষেত্রে আমরা ধরে নিতে পারি ঘূর্ণিঝড় রেমাল এবার আমাদের জন্য কি শুভ সংবাদ নিয়ে এলো, নাকি শুধু বিপদ নিয়ে এলো, আমাদের ভালোর জন্য না খারাপের জন্য এলো? যার আঘাতে আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে, তাহলে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আমাদের কি শুভ সংবাদ নিয়ে এলো বা কি শিক্ষা আমাদের দিয়ে গেল, সেটি আমাদের জানতে হবে।

‌‌ আমরা জানি ১৯৭১ সালের পর হতে আমাদের এদেশের সর্বশ্রেণীর মানুষ অনেক শিক্ষা গ্রহণ করেছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে।
যেমনঃ
১) বিপদে ধৈর্যধারণ করে বিপদ মোকাবেলা করা।
২) বিপদে বিচলিত না হওয়া
৩) একে অপরের বিপদে পাশে দাঁড়ানো
৪) বন্যা ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস শের আভাস পেলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে ফেলা
৫) শিশু নারী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সহ পরিবারের সকলকে সময় মত নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নেয়া
৬) ভেঙে না পড়া মনোবল না হারিয়ে সাহসের সঙ্গে সবকিছু মোকাবেলা করা ইত্যাদি।
বিগত কয়েক বছর পূর্বে ২০১৯-২০ ২১ সালে গোটা বিশ্বে ভয়ংকর ভয়াবহ করোনা আমাদেরকেও অনেক বড় শিক্ষা দিয়ে গেছে, এমনিভাবে আম যক্ষা গুলি বসন্ত কলেরা প্লিজ গোটা বিশ্বের বিবেককে অনেকখানি নাড়া দিয়ে গেছে সাথে সাথে অনেক শিক্ষা দিয়েও গেছে। ধৈর্য্য ধারণ করা ও সাহসের সঙ্গে সব কিছুর মোকাবেলা করা।
‘মানুষ মানুষের জন্য মানবতা মানবতার জন্য’
বিশেষ করে আমাদের এদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সত্যি কথা বলতে গেলে তিনি আসলে একজন লৌহমানবী শক্তি সাহসে অনেক বেশি বলিয়ান এক কথায় বোঝাবাচ্ছন্ন দেশপ্রেমিক দেশের সেবায় আত্মনিমগ্ন এক প্রতিরোধ এক মানুষ গণতন্ত্রের মানসকন্যা, মানবতার মাতা
‘ তার তুলনা শুধু তিনি নিজেই’
সর্বোপরি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, তার মধ্যে কি নেই? কোন কিছুর অভাব অনুভূত হয় না, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা জ্ঞান মেধা সংযম পরিশ্রম দেশপ্রেম আত্ম-মানবতা বোধ রাষ্ট্র পরিচালনার অপরিসীম দক্ষতা আর ক্ষমতার অধিকারী, বাংলার এক “মার্গারেট থ্যাচার”তাইতো তিনি এদেশের মানুষের সাথে একাত্ম হয়ে সকলকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে একটানা চাচার বারের সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী যিনি আত্ম মানবতার সেবায় বদ্ধপরিকর হয়ে নতুন করে ২০২৪-এ সালে এ দেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতার পাশে থেকে, আত্ম মানবতার সেবা করে যাওয়ার ব্রত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এগিয়ে যাচ্ছে দেশ বসে নেই তিনিও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তাই তিনি এদেশের পবিত্র মাটিতে পা রেখে পবিত্র সংসদে শপথ নিয়েছেন সেই শপথের মর্যাদা রক্ষার বোধোদয় থেকে, তিনি ছুটে চলেছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া।

গত ৩০ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা রাত থেকে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া, পটুয়াখালী কলাপাড়া অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে সকল ক্ষতি ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয় সব ধরনের আশ্বাস তিনি দিয়েছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, নতুন উদ্যমে কৃষক যাতে কৃষিকাজ করতে পারেন সেজন্য তিনি সার, বীজ দেবেন রাস্তাঘাট ব্রিজ মেরামতের সকল ব্যবস্থা করার আশ্বাস প্রদান করেছেন, একজন দেশপ্রেমিক ,একজন প্রধানমন্ত্রী আত্ম মানবতার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, ছুটে যাচ্ছেন ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায় নিপীড়িত মানুষের
পাশে দাঁড়িয়ে সাহস দিচ্ছেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন, এর চেয়ে আমরা কি আর আশা করতে পারি , যিনি একজন আগন্তুক ‘হ্যামিলনের বাশিওয়ালার’ মত দেশ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় গোটা দেশবাসীকে মোহিত করে তুলেছেন, আমরা দেশবাসী আজ অনেকখানি সাহসী হয়ে উঠেছি, কারণ আমাদের পাশে আছেন একজন মানুষ, একজন আত্ম মানবতাবাদী মানুষ, মানবতার মাতা, গণতন্ত্রের মানসকন্যা ,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরিশেষে শুধু এটুকুই বলতে চাই বাংলাদেশের উপর দিয়ে যতবার যত বিপদ ঝড় ,বন্যা ,জলোচ্ছ্বাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে ততবারই এদেশের একমাত্র রক্ষাকবচ আমাদের দেশের মায়ের মত নিজে বুক পেতে দিয়ে নিজে ক্ষতবিক্ষত হয়েই যেন তার সন্তান তুল্য বাংলাদেশ সহ ভারতের কিছু অংশ রক্ষা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাই এদেশের রক্ষাকবচ সুন্দরবনকে রক্ষা করতে আমাদের সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে, অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীদের হাত থেকে যেমন সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে, তেমনি পাশাপাশি সুন্দরবনে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের পিছনে সকল কারণ উদঘাটন সহ সকল প্রকার প্রচেষ্টা সংশ্লিষ্ট সকলকে ও আমাদেরকে নিতে হবে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো বেশি আন্তরিক হতে হবে, আরো বেশি প্রাণবন্ত করার জন্য যা কিছু করণীয় সে বিষয়ে,প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কৃপা দৃষ্টি আকর্ষণ সহ সর্ব প্রকার সাহায্য কামনা করতে হবে।

লেখকঃ আইনজীবী, সৃজনশীল লেখক, সাবেক সভাপতি, আইনজীবী সমিতি, যশোর।
Gmail : gmabumusa89@gmail.com

প্রকাশিত : রোব বার,  ০২  জুন ২০২৪

স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন