পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দু,চরে একটি আশ্রয়কেন্দ্র ! ঝুঁকিতে হাজার হাজার মানুষ।

জাকারিয়া জাহিদ, কুয়াকাটা(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের সাগরপাড়ের জনপদ কাউয়ার চর ও পর্যটন পল্লী চর গঙ্গামতি এলাকা একটি মাত্র আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। পর্যটন পল্লী গঙ্গামতি ঘেঁষা এসব গ্রামের মানুষ এখন ও আকাশের কোন মেঘ দেখলে বাড়ি ঘর চেড়ে পাশের গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এ এলাকার অধিকাংশ মানুষের বসবাস বেরিবাঁধের বাইরে।

প্রলয়ংকারী সুপার সাইক্লোন সিডরে এ চর থেকে কেড়ে নিয়েছে সাতটি তরতাজা প্রান। ওই গ্রামের মানুষের বেশির ভাগই জেলে। আবার কেউ কেউ দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। গ্রাম দুটির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ চরের বাসিন্দাদের অন্যতম একটি সমস্যা হলো, চরে একটি মাত্র আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। কাউয়ার চর এলাকার প্রায় দশ হাজার মানুষের বসবাস। সব মিলিয়ে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ১০০ জন। ‘চর গঙ্গামতি এলাকায় ৪ হাজার মানুষের বসবাস। সব মিলিয়ে ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৬০০ শত। এই এলাকায় মাত্র একটি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। ঝড়ের সময় মানুষজনের একটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থান সংকুলান হয় না। এ চরের মধ্যবর্তী স্থানে আরও একটি আশ্রয়কেন্দ্র দরকার। আরেকটা আশ্রয়কেন্দ্র হইলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হইবে।’

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদের গ্রাম কাউয়ার চর ও চর গঙ্গামতির প্রলয়ংকারী সুপার সাইক্লোন সময় বাসিন্দাদের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়। এত ক্ষতি হওয়ার কারণ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে গ্রাম দুটির অবস্থান হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের কারণে এমন ক্ষতি হয়েছে। প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়ে চর দুটির অনেক টিউবওয়েল জোয়ারের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে গ্রাম দুটির অবস্থান হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানিতে গ্রাম দু’টি তলিয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুটি চরে ঝড়ের সময় দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরের আশ্রয়কেন্দ্রে যেয়ে উঠতে হয়। চরের মধ্যে আরো একটি আশ্রয়কেন্দ্র থাকলে দু’চরে বসবাস করা মানুষের ভোগান্তি হবে না। ঝড়ের সময় মানুষজনের একটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থান সংকুলান হয় না। এ চরের মধ্যবর্তী স্থানে আরও একটি আশ্রয়কেন্দ্র দরকার। আরেকটা আশ্রয়কেন্দ্র হইলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হইবে।’ কাউয়ার চর এলাকা একটি মাত্র আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করলে চরে বসবাস করা মানুষের দুর্ভোগ কমে যাবে। কাউয়ার চর ও চর গঙ্গামতির কিছু উচু জায়গায় চরের বাসিন্দাদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য উচু জায়গায় টিউবওয়েল বসানো দরকার তাহলে জোয়ারের পানি টিউবওয়েল নষ্ট হবে না। ঘূর্ণিঝড় সময় গ্রাম পানিতে তলিয়ে থাকে। পানি উঠেছে বাড়ির মধ্যে। এতে শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তাই ঘরে থাকতে না পেরে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র ছুটেন। ডুবে থাকে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। এছাড়া পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ পরিস্থিতিতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে যায় গ্রাম কাউয়ার চর ও চর গঙ্গামতির বাসিন্দাদের।

চর গঙ্গামতির বিদ্যালয় রিমালের সময় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন সাহেদা বেগম। ৫৫ বছর বয়সী এই নারী বলেন, ‘বন্যার কারণে পানি বাড়ছেই। ঘরে কোমর পানি। দাঁড়াইবার জায়গা নেই। বন্যার পানির আমার ঘরের বেড়া ভেঙে গেছে। ঘরের ভিতরে আর থাকার মতো না। পরিবারের সদস্য নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’ ‘দ্রæত আশ্রয়কেন্দ্রে না গেলে বন্যার পানিতে শিশুদের বিপদ বাড়তে পারে। তাই বাড়িঘরের সব ফেলে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাচ্ছি। না ফেলে উপায় নেই সব নষ্ট হয়ে গেছে। একই কথা বলেন রানু বেগম। ৩৫ বছর বয়সী রানু বেগমের ভাষ্য, ‘বন্যার পানিতে আমার বাড়িটা ধসে গেছে। উপায় না পেয়ে এখানে দ্রæত আশ্রয়কেন্দ্রে যাই।

কাউয়ার চর গ্রামের জেলে আলী হোসেন বলেন, ‘ঝড়ের সময় আমাগো দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরের আশ্রয়কেন্দ্রে যাইয়া উঠতে হয়। চরের মধ্যে একটা আশ্রয়কেন্দ্র থাকলে আমাগো ভোগান্তি হইত না। আমরা চরেই একটা আশ্রয়কেন্দ্র চাই। এইডা হইলে ঝড়ের সময় আমরা দ্রæত যাইয়া আশ্রয় লইতে পারমু। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিও হেইহানে রাখতে পারমু। আমনেরা ওপরের দিকে একটা আশ্রয়কেন্দ্রের কথা জানাইয়েন।’

চর গঙ্গামতি এলাকার বাসিন্দা মোশারফ ফকির বলেন, চরের মধ্যে আরো একটি আশ্রয়কেন্দ্র থাকলে দু’চরে বসবাস করা মানুষের ভোগান্তি হবে না। ঝড়ের সময় মানুষজনের একটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থান সংকুলান হয় না।

চর গঙ্গামতি এলাকার ইউপি সদস্য মো. সিদ্দিক হাওলাদার জানান, চর গঙ্গামতি বঙ্গোপসাগর ঘেঁষা গ্রাম বন্যা সময় সব কিছু তলিয়ে যায়। এখানে যে চলাচলের বেরিবাঁধটি রয়েছে তা খুবই নিচু। ওই বেরিবাঁধটি আরো উচু করে নির্মান করা প্রয়োজন। আর বন্যা সময় টিউবয়েল গুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর আবহাওয়া ভাল হলে টিউবয়েলের পানি দুষিত থাকে তা আর পান করা যায় না।

কাউয়ার চর গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘ কাউয়ার চর গ্রামের লোকসংখ্যা প্রায় দশ হাজার। এ গ্রামের মানুষের জান-মাল রক্ষায় জরুরিভাবে আশ্রয়কেন্দ্র করে দেওয়া উচিত। গেল কয়েক বছর ধরইয়া আমরা উপজেলা প্রশাসনে যাইয়া এই ব্যাপারে বহু দেনদরবার করছি।’ ফলে দুর্যোগের সময় মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হন এ গ্রামের বাসিন্দারা।

ধুলাসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবদুল রহিম জানান, কাওয়ারচরের বাসীন্দাদের কোন আশ্রয় কেন্দ্র নেই। দুর্যোগের সময় বেরিবাঁধের বাইরের মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকেনা। চর গঙ্গামতি চলাচলের বেরিবাঁধটি রয়েছে তা খুবই নিচু। ওই বেরিবাঁধটি আরো উচু করে নির্মান করা প্রয়োজন। কাওয়ারচরের বাসীন্দাদের দুর্যোগের সময় চরচাপলী আশ্রয় কেন্দ্র গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.রবিউল ইসলাম বলেন, ওখানে একটি সাইক্লোনসল্টারের প্রয়োজন,তবে এখন কোন প্রকল্প নেই। পরবর্তীতে ব্যবস্হা করা হবে।

প্রকাশিত : মঙ্গল বার, ১৬ জুলাই ২০২৪

স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

পাইলস ফিস্টুলা রোগের কারণ ও প্রতিকার

শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায়